Stories
-
খোলা জানালা -Rawtone
“পাঁচটা গুনলাম না? হাঁ তাইতো, পাঁচটাই তো গুনলাম, কিন্তু এখন দেকছি তিনটে পটল! আর দুটো কি ভ ...
Posted Apr 2, 2015, 8:27 AM by A Billion Stories
-
দাদাগিরি -Ananya Pal
এমনিতেই আমার মাথাগরম বলে বদনাম, তার ওপর রীতিমত চর্চা করা তাগড়া চেহারা; লোকে আমায় ব ...
Posted Mar 19, 2014, 6:37 PM by A Billion Stories
-
একটি রূপকথা -Ananya Pal
সে অনেক কাল আগের কথা, এক ছিলেন রাজা চন্দ্রকেতু, প্রকৃতির কোলে শস্য শ্যামল ত ...
Posted Mar 4, 2014, 7:39 AM by A Billion Stories
| |
posted Apr 2, 2015, 8:27 AM by A Billion Stories
“পাঁচটা গুনলাম না? হাঁ তাইতো, পাঁচটাই তো গুনলাম, কিন্তু এখন দেকছি তিনটে পটল! আর দুটো কি ভুতে খেয়ে ফেলল? ব্যাটাছেলে চালাকি করার জায়গা পায়না! কালই হারামজাদা টাকে উত্তম মদ্ধম দিতে হবে - আমাকে ঠকানো? আরে যখন জোয়ান ছিলাম তখন আমার চোখের দিকে তাকাতে রিতিমত লোকে ভয়ে পেত!” - বাষট্টি বছর অতিক্রম করলেও তার মীলীটীড়ী মেজাজে এখনও ভাটা পড়েনি বোঝাই গেল। রামকিঙ্কর বাবু রাগের চোটে বাজারের ব্যাগটা ছুড়ে কোথাও একটা ফেলে দিলেন।
পরের দিন একটু বেলা কোরেই, যাতে ভিড়টা আরেটু বাড়ে, রামকিঙ্কর বাবু বাঁজারে গিয়ে উপস্তিত হলেন। রামকিঙ্কর বাবুকে পাড়ার ক্লাবের সাম্পাদক হওয়ার সুবাদে মটামটি সবাই চেনে, তাই বাজারে যেতে না যেতেই চায়ের দকানের হারু হাঁক পারলো “পেন্নাম রাম দা, আপনার চা রেডি!” কিন্তু কোথায়ে আর চা সেদিন! রামকিঙ্কর তার রক্ত চক্ষু নিয়ে গডগড করে এগিয়ে গেলেন লালুর ছোট্ট দকানের দিকে। রামকিঙ্কর বাবুকে দেখে যেইনা লালু একগাল হাসতে যাবে অমনি সপাটে কশিয়ে একটা চর বসালেন তার গালে। লালু কিছু বুঝে ওঠার আগেই সামনে রাখা এক ঝুড়ি পটল ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিলেন আর সেগুলোকে পা দিয়ে পিষটাতে লাগলেন আর লালু হতবাকের মতন শুধু থেঁৎলে যাওয়া পটলগুলির দিকে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকল আর তার দু নয়ন গড়িয়ে ঝড়তে লাগল স্ফটিকবিন্দুর মতন স্বচ্ছ অশ্রুধারা। লালু বাচ্চা ছেলে, বয়েস বড়জোর সাত কি আট; আগের বছর ডেঙ্গুতে তার বাবা না মারা গেলে লালু এই সামায় ক্লাসএই থাকতো। কীইবা আর করবে লালু? বাড়িতে অসুস্থ মা; লালু হাল না ধরলে কেইবা ওদের দ্যয়া করে দুটো পয়েশা দিয়ে সাহাজ্জ করত? ধ্বংসলিলার অবসান ঘটিয়ে রামকিঙ্কর বাবু আরেকটা নিরমম চর কসিয়ে একটা বজ্র হুঙ্কার ছাড়লেন “বয়েস্ক মানুষ বলে ভাবিস না যে আমাকে ঠকিয়ে তুই পার পায়ে জাবি!”
বাড়ি ফিরে আরেক বিপত্তি - বাজারএর ব্যাগটা পাওয়া যাচ্ছেনা। গতকাল রাগের মাথায়ে কোথায়ে ছুড়ে ফেলেছিলেন কিছুতেই মনে পরলনা রামকিঙ্কর বাবুর। তাঁর স্ত্রি শিবানিদেবি তো রেগেই আগুন। হাজার খোজের পর ব্যাগটা বেড়িয়ে এলো শোফার পিছনদিক থেকে। পেলেন তাঁর স্ত্রিই। কিন্তু রামকিঙ্কর বাবুকে অবাক করেদিয়ে তাঁর স্ত্রি সুই সুত নিয়ে বসলেন। রামকিঙ্কর বাবু কিছু বুজতে না পারে একটু এগিয়ে গিয়ে দেখলেন ব্যাগটার গায়ে পেল্লাই একটা ফুটো।
রামকিঙ্কর বাবু কিছু একটা ভাবতে ভাবতে তাদের অনেক পুরনো কারুকাজ করা সেগুন কাঠের বিছানাটার দক্ষিন কনে অনেক দিনের বন্ধ জানালাটা খোলার চেষ্টায়ে বেস্ত হলেন।
-Rawtone
Photo by: Submitted by: Rawtone Submitted on: Sun Jan 18 2015 12:58:29 GMT+0530 (IST) Category: Original Language: Bengali
- Read submissions at http://abillionstories.wordpress.com - Submit a poem, quote, proverb, story, mantra, folklore, article, painting, cartoon, drawing, article in your own language at http://www.abillionstories.com/submit
|
posted Mar 19, 2014, 6:37 PM by A Billion Stories
এমনিতেই আমার মাথাগরম বলে বদনাম, তার ওপর রীতিমত চর্চা করা তাগড়া চেহারা; লোকে আমায় বিশেষ ঘাঁটায় না । পাড়ার ভালো মন্দের দায়, ছেলে ছোকরাদের ওপর নজরদারি, সে একরকম আমি নিজের দায়িত্ব বলে মনে করি; তাতে মাঝে মধ্যে একে ওকে একটু কড়কাতে হলে কি বা এসে যায়! তবে আজ সকাল থেকেই বিলের কাণ্ড দেখে মেজাজ আমার সপ্তমে, এর একটা শেষ না দেখে আমি আর ছাড়ছি না । বেশ কিছুদিন ধরেই ঘোষ বাড়ীতে ওর চুপি চুপি যাতায়াত আমি লক্ষ করেছি, মিয়াঁ বিবি যখন কাজে যায় তখনই বেটা উঁকি ঝুঁকি মারে খিড়কির দরজা, নয় রান্নাঘরের জানলা দিয়ে । কার সায়ে এসব চলছে তাও বুঝি; গেলো মাসে ভালবেসে ও বাড়ির মিনিকে একটা ফিস ফ্রাই খাওয়াতে চেয়েছিলাম । তা দোকান থেকে বাগিয়ে আনতে একটু ঠাণ্ডা হয়ে গেছিল আরকি, অমনি মুখ ঝামটে বলল ‘বাসি খাবার আমি খাই না!’ আর এই ছিঁচকে বিলে, তার ওপর কি দরদ! আজ তিতলিদির জন্মদিন, ঘোষ বাড়িতে হেভি খাওয়া দাওয়া, পাড়াশুদ্ধু লোকের নেমন্তন্ন; আমিও যাবো, তবে একেবারে শেষের দিকে, নেমন্তন্নের ধার আমি ধারি না । তাই তো বিলেটাকে সন্দেহ, আমি তো জানি ব্যাটা চুরি বিদ্যেয় এরই মধ্যে হাত পাকিয়েছে, নির্ঘাত লোকের ভিড়ে হাতসাফাইয়ের তালে আছে । আর চুরির দোসর যখন ঘরেই মজুত তখন আর পায় কে! কিন্তু আমি থাকতে সেটি হতে দিচ্ছিনা, তক্কে তক্কে আছি, আজ হাতে নাতে ধরে ওকে পাড়া ছাড়া করে তবে আমার শান্তি । বাড়ির ভেতর থেকে মাছের কালিয়া আর ভেটকির পাতুরির গন্ধে রাগটা প্রায় গলে যাবার জোগাড়, কিন্তু না, কর্তব্যে অবহেলা এ শর্মা করে না, তাই না পাড়ায় আমার এতো খাতির! যাইহোক, দিপুদের পাঁচিলের আড় থেকে আমি ঠিকই নজর রাখছি হতচ্ছাড়া বিলের ওপর । লোকজন বেশ কিছু আসতে শুরু করেছে, মিনি ঢঙ করে তিতলিদির সাথে সাথে ঘুরছে, যেন জন্মদিনটা আজ ওরই! খাওয়ার আসরে হাঁকডাক বাড়ছে, ঠাকুর সামাল দিতে নিজেই পরিবেশনে হাত লাগিয়েছে; এই মওকায় বিলে একলাফে বাড়ির ভেতর, আর যায় কোথায় আমিও মারলাম এক লাফ, একেবারে বিলের ঘাড়ে । দুজনে গড়াতে গড়াতে রান্নাঘরের দরজায়, গায়ের জোরে ব্যাটা নেহাত কম যায় না, সঙ্গে তেমনি গলার জোর, জাপটাজাপটি, গর্জন; আজ কেউ একপা পিছব না, যা থাকে কপালে । ‘আ মল যা, এদুটো আবার ঠিক জুটেছে! মাছের গন্ধ পেয়েছে কি হতচ্ছাড়াদের দৌরাত্ব শুরু । ফেলে দিয়ে আয় তো ন্যাপা দুটোর ঘেঁটি ধরে!’ ন্যাপার ঠাকুমার খোনা গলার চিৎকার কানে যেতে না যেতেই ‘ঝপাস!’ কে যেন খামচে নিয়ে চুবিয়ে দিলো ড্রেনের জলে । অপমানে চোখে জল এলো, এই দুনিয়ায় ভালো কারো করতে নেই । এতো যে নিঃস্বার্থে পাড়ার দেখাশুনো করি, নাহয় দু চারটে মাছের টুকরো তার বদলে খাজনা ভেবেই নিই, তাবোলে ছিঁচকে বিলে আর আমি এক হলাম! এর থেকে তো মাছ খাওয়া ছেড়ে দেওয়াই ভালো.................. নাহ্ সেটা বোধহয় পারা যাবে না! ***
-Ananya Pal
Photo by: Submitted by: Ananya Pal Submitted on: Fri Mar 14 2014 11:26:44 GMT+0530 (IST) Category: Original Language: Bengali
- Read submissions at http://abillionstories.wordpress.com - Submit a poem, quote, proverb, story, mantra, folklore, article, painting, cartoon, drawing, article in your own language at http://www.abillionstories.com/submit
|
posted Mar 4, 2014, 7:39 AM by A Billion Stories
সে অনেক কাল আগের কথা, এক ছিলেন রাজা চন্দ্রকেতু, প্রকৃতির কোলে শস্য শ্যামল তাঁর রাজ্য আনন্দপুর। রাজ্যে কোনও কিছুরই অভাব নেই, প্রজারা সুখী, খুশী রাজকর্মচারীরাও । রাজা মশাই বড় ভালো মানুষ, পরের সুখেই তাঁর আনন্দ । তবু এর মাঝেই রয়েছে একটা ছোট্ট অস্বস্তি; রাজা যুবক, দেখতে শুনতেও ভালই, কিন্তু তাঁর গায়ের রঙ বেজায় কালো । এই রঙ নিয়ে তাঁর মনে যত সংশয়; কালো রাজা না জানি কত হাসির পাত্র । সংশয় এমন যে রাজ প্রাসাদে না আছে কোনও আয়না, না কেউ পরে কালো রঙের কাপড়; এমনকি, রাজার সামনে মন্ত্রী, আমলা কেউ ‘কালো’ কথাটাও ব্যবহার করে না পাছে রাজা দুঃখ পান । এইত সেদিন রাজদরবারে সভাকবি সুর করে ধরেছেন তাঁর নতুন কবিতা,- ‘আমার মন প্রাণ সব চুরি গেছে আজ, আমি গোয়ালিনী অবলা; শ্যাম নাম জপী সারা দিনমান, চুরি করে কোথায় পালালে ‘শালা’!’
গান শুনে রাজা মশাই ভ্যাবাচ্যাকা, কবির মুখ কাঁচুমাচু; আর বাকি পারিষদের ঠোঁটে মুচকি হাসি । আসলে কবিবর লিখেছিলেন ‘কালা’ কিন্তু গাইতে গিয়ে তড়িঘড়ি ভুল শোধরাতে শেষে শ্বশুর পুত্রকে স্মরণ । এতো গেল রাজসভার কথা, রাজ্যের বাইরে যেতেও রাজার ভারি সঙ্কোচ । কদিন আগে প্রতিবেশী রাজ্য হুতোমপুরের রাজকন্যের স্বয়ম্বরের এলো নেমন্তন্ন; মেয়ের বাপ কতো বিনয় করে চিঠি পাঠালেন; সুশীল, ধনবান, তার ওপরে একটাও বিয়ে হয়নি এখনও, এমন জামাই পেতে কোন রাজাই না চান! কিন্তু তাতে কি, রাজা চন্দ্রকেতু অম্লশূলের বাহানায় নেমন্তন্ন ফেরত দিলেন; সুন্দরী রাজকন্নে, এতো রাজার মাঝখানে যদি কালো মুখ দেখে ঠোঁট বেঁকায়! দিন যতো যায় মন্ত্রীরা চিন্তায় পরেন, রাজ্যে একজন রানীর প্রয়োজন নতুবা বংশলোপের সম্ভাবনা । এ অবস্থায় রাজবয়স্য অনেক মাথা চুলকে, নস্যি সেবন করে সকাল সন্ধ্যে তামুক ফুঁকে একটা বুদ্ধি বের করলেন । একদিন রাজাকে একা পেয়ে কথাটা পেড়েই ফেললেন, ‘আমি বলি কি মহারাজ, রাজকন্যেতে কাজ নেই আপনি বরং বেশ একটি সাদামাটা দেখে রানী আনুন ঘরে । পার্বতী বিনে ভোলানাথকে কি মানায়?’ ‘তোমার বক্তব্যটা কি হে ঘণ্টেশ্বর? একটু সোজা কথায় বল’ । ‘আজ্ঞে, আমাদের প্রধান্মন্ত্রীমশাই; তাঁর ধরুন গিয়ে মা ষষ্ঠীর কৃপায় গণ্ডা খানেক কন্যা, আর চেহারাপত্র তাদের বাপের মতই । হেঁ হেঁ অতএব হবু স্বামীর চেহারা নিয়ে তাদের কোনও মাথাব্যাথা হবেই না (প্রসঙ্গতঃ প্রধানমন্ত্রী দেবদূত বর্মাকে তাঁর চেহারার কারনে আড়ালে লোকে যমদূত বলে ডাকে)’ । কথাটা শুনে রাজার চোখের দৃষ্টি ঘন হয়ে এলো, ‘আমি বোধহয় এখন সকলের দয়ার পাত্র তাই না?’ ‘সেকি মহারাজ, না না!’ ঘণ্টেশ্বর লজ্জা পেয়ে পালাতে পথ পেলেন না । এক চৈতালি পূর্ণিমার সন্ধ্যেয় রাজা বিশ্রাম করছেন তাঁর রম্যদ্দানে; যূথী-মালতীর গন্ধে চারিদিক মাতোয়ারা, দখিনা বাতাসে শীতলতার আভাস । হঠাৎ ভারি মিষ্টি নারীকণ্ঠের গান ভেসে এলো কিছু দূর থেকে, এতো গান নয় যেন সুরের মূর্ছনা । চন্দ্রকেতু মন্ত্রমুগ্ধের মত এগিয়ে গেলেন গান লক্ষ করে । বাগানের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে একটি নালা, নালার ওপর কিছু দূরে দূরে বাঁধা আছে মনোরম কাঠের পুল, আর তার চারপাশে নানান ফুলের গাছ । এমনই একটি পুলের ধারে বকুল গাছের নীচে বসে আছে এক পরমা সুন্দরী মেয়ে; আকাশের চাঁদ হার মেনেছে তার মুখশ্রীর লালিত্যে, সোনার বরণ মেয়ের রঙের ঔজ্জ্বল্যে জোৎস্নাও ম্লান। রাজা খানিক অবাক হয়ে চেয়ে রইলেন রূপসীর দিকে, তারপর হঠাৎ সঙ্কুচিত হয়ে পরলেন নিজের কারনে । তিনি ফিরেই যাচ্ছিলেন নিঃশব্দে, কিন্তু গানের কথা তাঁকে আটকাল।
‘শ্রীমতী ভোলে শাসন বারণ কানুর দেখা পেলে - ফুল ভোলে তার রূপের গুমোর ভোমরা কাছে এলে । কালো আঁখি ঢলঢল বাড়ায় মুখের শোভা – চাঁদের আলোয় কালো বরণ বড়ই মনোলোভা’ ।
গান কি তাঁকেই শুনিয়ে গাইছে ও মেয়ে? একি কোনও ছলনা না মনের ভুল? এতো সব ভাবনার মাঝেই সে মেয়ে এসে দাঁড়িয়েছে সামনে, তার হাতে বকুল ফুলের মালা । ‘কালো-সাদা, রাত-দিন; একে মধ্যে অন্যে লীন । আমার আলো ফুটবে কি গো তোমার আঁধার বিন?’
মালা দিয়ে রাজাকে বরণ করে নেয় দেবদুত বর্মার একমাত্র রূপবতী গুণবতী মেয়ে কাঞ্চনমালা; ঘণ্টেশ্বরকে উশকে রাজার কাছে পাঠনোর বুদ্ধি সেই দিয়েছিল তার বাবাকে । এরপর ধুমধাম করে রাজার বিয়ে হল, আমার কথাটি ফুরল – নোটে গাছটি মুড়ল ।
*****
-Ananya Pal
Photo by: Submitted by: Ananya Pal Submitted on: Tue Jan 21 2014 14:57:37 GMT+0530 (IST) Category: Original Language: Bengali
- Read submissions at http://abillionstories.wordpress.com - Submit a poem, quote, proverb, story, mantra, folklore, article, painting, cartoon, drawing, article in your own language at http://www.abillionstories.com/submit
|
|